অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রতিপক্ষকে নির্মূল ও নিশ্চিন্ন করতে বিগত ১২ বছর ধরে খুন, হত্যা, গুম, অপহরণ ও কথিত বন্দুকযুদ্ধ চালিয়ে আসছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা তার বর্তমান শাসনামলে বিএনপি-জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। গুম-অপহরণ করেছে অনেককে। আর কথিত যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বায়ুবীয় অভিযোগ তুলে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদেরকে। অনেকেই বলে থাকেন শেখ হাসিনা সব সময় খুনের নেশায় বিভোর।
তবে সম্প্রতি তার এই খুন-হত্যা ও গুম-অপহরণের সাথে এখন যোগ হয়েছে নিরপরাদ মানুষের চরিত্র হনন।
দেখা গেছে, হেফাজতে ইসলাম যেদিন থেকে শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল সেদিন থেকেই সংগঠনটির বর্তমান কমিটির নেতাদেরকে হেনস্থা ও হয়রানি করার জন্য চক্রান্ত শুরু করে শেখ হাসিনা। তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগ না পেয়ে হেফাজত নেতাদের চরিত্র হননের পরিকল্পনা করে সরকার। সেই পরিকল্পনার আলোকেই হেফাজত নেতা মামুনুল হকের উপর মিথ্যা অভিযোগ তুলে সোনার গাওয়ের রিসোর্টে তাকে হেনস্থা করে। তাকে গ্রেফতারের পর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে সরকার।
এরপর গ্রেফতার করা হয় হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে। তিনিও এক নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণমাধ্যমের কাছে প্রচার করছে সরকারের অনুগত পুলিশ কর্মকর্তারা।
সর্বশেষ প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে কথিত নথি চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা দিয়েছে সরকার।
রোজিনা ইসলামের বিষয়টি শুধু দেশের ভেতরই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পর্যন্ত নাড়া দিয়েছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রধান হাতিয়ার হল তথ্য। আর যারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেন, তারা সব সময়ই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য খুঁজে বের করেন। এই তথ্য বের করে আনতে তাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের লোকজন এটাকে বলছে সরকারি নথি চুরি। অথচ তথ্য সংগ্রহের এই কৌশলগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতপ্রাপ্ত।
তবে রোজিনার বিষয়টি সবার কাছেই ক্লিয়ার যে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করায় মন্ত্রীসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা তার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। রোজিনাকে তাকে কোনোভাবেই থামাতে পারছিল না। সর্বশেষ তারা তার চরিত্র হননের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। আর এটাও হয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের পরামর্শেই।
রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্নীতি-লুটপাট ঢাকতে ও প্রতিপক্ষ দমন করতে শেখ হাসিনা এখন নিরপরাধ মানুষের চরিত্র হননের নেশায় মত্ত হয়েছেন। যার কারণে একেরপর এক মানুষের চরিত্র করে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের দুর্নীতি তুলে ধরায় রোজিনাকে সরকার পুরষ্কৃত করতে পারতো। সরকারের একটি খাত দুর্নীতি মুক্ত হতো এটা দেশের জন্য গর্বের। অথচ দেখা গেছে তার উল্টো। সেই সরকার একজন সাংবাদিককে চুরির অভিযোগ দিয়ে হেনস্থা করলো । এমনকি কথিত মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতারও করা হলো। এসব জুলুমের প্রতিদান একদিন সরকার পাবে।
Discussion about this post