অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কথিত ৩০ লাখ শহীদ নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। তবে দেশে প্রেমের টানে অনেকেই তাদের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন আবার কেউবা বেচে অমর হয়ে আছেন। কিন্তু যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র ও মানুষের বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার, সেই চেতনা আজ কতটা বিদ্যমান?
দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেই চেতনাকে পুঁজি করে ব্যবসা করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বর্তমান সরকার দুর্নীতি, লুটপাট, খুন-গুম ও নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় ক্ষমতাসীন দলের সংগঠন গুলো যেন হয়ে উঠছে এক একটি সন্ত্রাস বাহিনী।
লক্ষ করলে দেখা যায়, ৭১ সালে যারা জন্মগ্রহণ করেনি তারাও বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধা। সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আওয়ামীপন্থী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেদারসে মুক্তিযুদ্ধা সনদ পাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার জন্য ১ যুগ ধরে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা কর্মী ভুয়া তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল হয়েছে।
তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে শেখ হাসিনার অর্থমন্ত্রী ও রাতের ভোটের এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার চেষ্টা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভুয়া তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু তার দেযা তথ্য সঠিক না হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বাতিল ঘোষণা করে।
সূত্র বলছে, অর্থমন্ত্রীর সম্মান নষ্ট হবে-এমন আশঙ্কা থেকে বিষয়টিকে গোপন করে রাখে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রী ভুয়া তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার চেষ্টা করেছেন এমন খবর প্রকাশ হলে সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হবে বলেই বিষয়টি গোপন রাখা হয়। তবে বিষয়টি তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করে।
এদিকে এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর সরকারের ভেতরেও এটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী এমন কাজ করবে এটা কেউ মানতে পারছেননা। এছাড়া রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার(১৭মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান। তিনি বলেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেট অন্তর্ভূক্তি প্রচেষ্টার দায়ে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ করার দাবি জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল জানান, মঙ্গলবার (১৫মার্চ) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অর্থমন্ত্রীর আবেদন বাতিল হওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় দলের স্থায়ী কমিটির ১০ জন সদস্য অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল জানান, দলীয় সভায় দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রতিবাদে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচী মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন হাট সভা পর্যায়ে পালিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং আসন্ন রমজান মাসের আগে দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রতিবাদ কর্মসূচী অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
Discussion about this post